Search

সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা

কামরুজ্জামান রাজু/ইসরাফিল হোসেন, কেশবপুর (যশোর): মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়িতে ২৪ জানুয়ারি থেকে সপ্তাহব্যাপী শুরু হচ্ছে মধুমেলা।


সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা

এ মেলা উপলক্ষে সাগরদাঁড়িকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। কপোতাক্ষ নদ পাড়ের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লাখ লাখ মধুভক্তের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে উঠবে মেলা প্রাঙ্গণ। কবির জন্মভূমির স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদ পাড়, জমিদার বাড়ির আম্রকানন, বিদায় ঘাট, মধুপল্লীসহ মেলা প্রাঙ্গণে ইতিমধ্যেই আসতে শুরু করেছে দর্শনার্থীরা। মধুমেলা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপনের লক্ষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। মেলা উপলক্ষে এলাকার মানুষের ভেতর দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা।
জানা গেছে, আগামী ২৫ জানুয়ারি মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যশোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সাগরদাঁড়িতে ২৪ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী মধুমেলার আয়োজন করা হয়েছে। ২৪ জানুয়ারি (শুক্রবার) বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে মধুমেলার উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
সরেজমিন সাগরদাঁড়ি ঘুরে দেখা যায়, মহাকবির ২০১তম জন্মবার্ষিকী ঘিরে এবারের মধুমেলায় সকলের ভেতর এক ধরনের উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। মেলা প্রাঙ্গণের বিভিন্ন প্যান্ডেলসহ শিশু বিনোদনের সরঞ্জাম প্রস্তুত করা হয়েছে। স্থানীয় দোকানদারদের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন। এ ছাড়া যশোর শহরসহ কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মধুমেলার ফেস্টুন টাঙানোসহ প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে। দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য সপ্তাহব্যাপী সাগরদাঁড়ির মধুমঞ্চে আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পাশাপাশি প্যান্ডেলে সার্কাস, যাদু প্রদর্শনী ও মৃত্যুক‚প থাকছে। রয়েছে শিশুদের জন্য নাগরদোলাসহ বিভিন্ন আয়োজন। এছাড়া কুটির শিল্পসহ গ্রামীণ পসরা ও কৃষিমেলাও থাকছে।
মধুমেলা শুরুর আগেই মেলা প্রাঙ্গণের প্রস্তুতি দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন অসংখ্য মানুষ। সাগরদাঁড়ির আলোকচিত্র শিল্পী মুফতি তাহেরুজ্জামান তাছু বলেন, ‘মধুমেলা উপভোগ করার জন্য ইতিমধ্যে সাগরদাঁড়ি এলাকাসহ চারপাশের গ্রামে গ্রামে আত্মীয়-স্বজন আসতে শুরু করেছে। অনেকেই মেয়ে-জামাই, বন্ধু-বান্ধবসহ অতিথিদের দাওয়াতও দিয়েছেন। প্রত্যেকটি বাড়িতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এবারের মেলায় লাখ দর্শনার্থী ও মধুপ্রেমীদের সমাগম ঘটবে।’
মধুপল্লীর কাস্টডিয়ান হাসানুজ্জামান বলেন, ‘মধুমেলা উপলক্ষে মধুপল্লী সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। দর্শনার্থীরা মধুপল্লীতে কবির ভাস্কর্য, প্রসূতিস্থল, কাছারিবাড়ি, স্মৃতি বিজড়িত আসবাবপত্র ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র দেখতে পারবেন।’
মধুসূদন একাডেমির পরিচালক কবি ও মধুসদন গবেষক খসরু পারভেজ বলেন, ‘সপ্তাহব্যাপী মধুমেলায় মধুসূদনের জীবন ও সাহিত্য স¤পর্কে দর্শনার্থীরা জানার সুযোগ পাবেন। মেলার উদ্বোধকের নিকট এবারও সাগরদাঁড়িতে মহাকবির নামে সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়টি জানানো হবে।’
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ‘সাগরদাঁড়িতে মধুমেলা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপনের লক্ষে সকল ধরনের প্রস্তুতি স¤পন্ন করা হয়েছে। মধুমঞ্চে সপ্তাহব্যাপী কেশবপুর ও যশোরের শিল্পীগোষ্ঠীর পাশাপাশি দেশবরেণ্য কবি, সাহিত্যিক ও শিল্পীরা অংশ নেবেন। এবারও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকেল মধুসূদন পদক প্রদান করা হবে। মেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি প্রশাসন ব্যাপক তৎপর থাকবে। দর্শনার্থীদের মধুমেলা উপভোগ করতে যাতে কোন অসুবিধা না হয় তার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। #