Search

চুনারুঘাটে শিক্ষার আলো, এমপিওভুক্তির দাবি এলাকাবাসীর

হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত ইসমাইল মুন্সী উচ্চ বিদ্যালয় বর্তমানে এলাকাবাসীর জন্য শিক্ষার এক নতুন দিগন্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সিলেট শিক্ষা বোর্ডের সকল বিধিমালা পূরণ করে একাডেমিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।


চুনারুঘাটে শিক্ষার আলো, এমপিওভুক্তির দাবি এলাকাবাসীর

বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও শিক্ষানুরাগী দানবীর রাজা আহমেদ মুন্সী। তিনি নিজ খরচে ১৫০ শতক জমি বিদ্যালয়ের নামে দলিল করে দেন এবং শিক্ষা তহবিলে ১০ লক্ষ টাকা জমা প্রদান করেন। শুধু তাই নয়, আধাপাকা ভবন, শ্রেণিকক্ষ, অফিস, ডিজিটাল ক্লাসরুম, শিক্ষক কমনরুম, উন্নতমানের ওয়াশরুম, লাইব্রেরি ও খেলার মাঠ নির্মাণ করে বিদ্যালয়টিকে একটি পূর্ণাঙ্গ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করেন।

প্রধান শিক্ষক সাইফুজ্জামান চৌধুরী জানান, ২০১৭ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি পাঠদান শুরু করে এবং বর্তমানে এক হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী নিয়মিত ক্লাস করছে। বিগত দুই বছর এসএসসি পরীক্ষায় বিদ্যালয়ের ফলাফল প্রায় শতভাগ। তিনি আরও জানান, ২০১৭ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত রাজা আহমেদ মুন্সী বিদ্যালয়ের উন্নয়নে প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয় করেছেন।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুস শহীদ বলেন, ৮নং সাটিয়াজুরী ইউনিয়নের অন্তর্গত চা-বাগান ও রাবার বাগান অধ্যুষিত এই জনপদে আগে কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয় না থাকায় প্রাথমিকের পর অধিকাংশ শিক্ষার্থী ঝরে পড়ত। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় আশপাশের স্কুলে যাওয়া ছিল কষ্টসাধ্য। এই বাস্তবতায় রাজা মুন্সী সাহেব নিজ উদ্যোগে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন, যা এখন এই অঞ্চলের শিক্ষার প্রধান ভরসা।

সাটিয়াজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দালুর রহমান বলেন, এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ফলে এখন আর শিক্ষার্থীদের দূরে গিয়ে পড়ালেখা করতে হয় না। ইসমাইল মুন্সী উচ্চ বিদ্যালয় এ এলাকার শিক্ষার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য ও সহকারী অধ্যাপক (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, "আমার মামা রাজা আহমেদ মুন্সীর একক প্রচেষ্টায় এ প্রতিষ্ঠানের জন্ম। এখন সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই, যেন বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত করা হয়।"

এখন প্রয়োজন শুধু সরকারের সহানুভূতিশীল দৃষ্টি ও দ্রুত এমপিওভুক্তির বাস্তবায়ন। এলাকাবাসী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের একটাই প্রত্যাশা—এই আলোকবর্তিকা যেন টিকে থাকে আর দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয় দুর্গম জনপদে।