মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরির দিনে স্রেফ উড়ে গেল বাংলাদেশ
আগে ব্যাটিং করে ৩৮২ রানের পাহাড় গড়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এই পাহাড় ডিঙে জিততে হলে অতিমানবীয় ক্রিকেট খেলতে হতো বাংলাদেশি ব্যাটিং লাইনআপকে। কিন্তু বিশ্বকাপের শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ দাঁড়াতেই পারল না। দলের অন্যদের নাকানি-চুবানি খাওয়ার দিনে উজ্জ্বল কেবল অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। একপ্রান্ত আগলে রেখে অসাধারণ এক সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। তবে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে ম্যাচটা হারতে হয়েছে ১৪৯ রানের বড় ব্যবধানে।

কুইন্টন ডি ককের বিধ্বংসী ১৭৪ রানের ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার দেয়া ৩৮৩ রানের পাহাড়সম লক্ষ্যে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশ। ব্যাটিং ব্যর্থতার দিনে টাইগারদের হয়ে একাই লড়ে ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শেষ পর্যন্ত সাইলেন্ট কিলারের শতকে লজ্জার হার এড়িয়ে ২৩৩ রানে থামে সাকিব বাহিনী। ফলে ১৪৯ রানের বড় ব্যবধানের জয়ে পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে এইডেন মার্করামের দল।
প্রোটিয়াদের দেয়া ৩৮৩ রানের পাহাড়সম লক্ষ্যে বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস শুরু করতে আসেন তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস। শুরুটা দেখেশুনে শুরু করেন এই দুই ওপেনার। ছয় ওভারে বিনা উইকেটে ৩০ রান তুলে লড়াইয়ের আভাস দেন দুই ওপেনার। তবে সেই গতি আর ধরে রাখতে পারেনি টাইগাররা সপ্তম ওভারে এসে জোড়া ধাক্কা খায় তারা।
ইনিংসের সপ্তম ওভারে মার্কো ইয়ানসেন টানা দুই বলে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার তানজিদ তামিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ১৭ বলে ১২ রান করেন তামিম। অপরদিকে ক্রিজে নেমে শুরুতেই গোল্ডেন ডাক মেরে তামিমের পথে হাঁটেন শান্ত। এরপর উইকেটে এসে থিতু হতে পারেননি অধিনায়ক সাকিবও।
ইনিংসের অষ্টম ওভারে লিজার্ড উইলিয়ামসের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে করেন ৪ বলে ১ রান। ফলে ৩০ রানে বিনা উইকেট থেকে টাইগারদের স্কোরবোর্ড দাঁড়ায় ৩১ রানে ৩ উইকেট। শুরুর ধাক্কা সামাল দিতে চতুর্থ উইকেট জুটিতে লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম কিছুটা আশা জাগালেও ব্যর্থ হন তারা।
১২তম ওভারে ১৭ বলে ৮ রান করে ফিরেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। অপরদিকে টাইগার ওপেনার লিটন দাস ক্রিজে থাকেন কেবলই লড়াইয়ের জন্য। তবে এই টাইগার ব্যাটারও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন। ৪৪ বলে ২২ রান করে রাবাদার বলে ফেরার আগে তিনি খেলেন ৩৬টি ডট বল। নিয়মিত বিরতিতে উইকেটে হারিয়ে বিপাকে পড়তে থাকা টাইগার যখন বড় ব্যবধানে হারের লজ্জার রেকর্ডের শল্কায়। তখন টাইগার শিবিরে স্বস্তি হয়ে আসে রিয়াদের ব্যাটিং।
তার ব্যাটে বিশ্বকাপের ইতিহাসে ২৭৫ রানের রেকর্ড ব্যবধানের হার থেকে বাচে টাইগাররা। একপ্রান্ত আগলে রেখে শেষ চেষ্টা করেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে ৬৬ বলে চলতি আসরে নিজের প্রথম ফিফটির দেখা পেয়েছেন তিনি। তার ব্যাটে হারের ব্যবধান কমাতে লড়ে বাংলাদেশ। শেষ দিকে মুস্তাফিজুকে নিয়ে ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক তুলেও নিয়ে থাকে রিয়াদ। তবে শতকে পর বেশিক্ষণ উইকেটে টিকেননি তিনি।
দলীয় ২২৭ রানে ১১১ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ২০ বলে হাতে রেখেই ২৩৩ রানে অলআউট হয় টাইগাররা। প্রোটিয়াদের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন জেরাল্ড কোয়েৎজি।