Search

সাতক্ষীরায় আ.লীগ নেতার টর্চার সেল, ব্যবসায়ীকে ১৫ দিন আটকে নির্যাতন

সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দরে পাওনা টাকা আদায়ে এক ব্যবসায়ীকে ১৫ দিন আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় ওই ব্যবসায়ীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন দেখা যায়।


সাতক্ষীরায় আ.লীগ নেতার টর্চার সেল, ব্যবসায়ীকে ১৫ দিন আটকে নির্যাতন

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সাঈদ মোহাম্মদ সাদাত চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ গ্রামের বাসিন্দা। শুক্রবার রাতে তিনি সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা করেন।

 

 

মামলার আসামিরা হলেন ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ এস এম মাকসুদ খান, তার ম্যানেজার মহসিন হোসেন, অফিসের কর্মচারী আকাশ, রাজিব ও মাকসুদের চাচাতো ভাই টফি।

 

nagad

 

এদের মধ্যে ম্যানেজার মহসিন হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরপর রাতেই মূল অভিযুক্ত পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ এস এম মাকসুদ খানকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

 

সাতক্ষীরায় আ.লীগ নেতার টর্চার সেল, ব্যবসায়ীকে ১৫ দিন আটকে নির্যাতন

রামুতে অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান, গ্রেপ্তার ১

 

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সাঈদ মোহাম্মদ সাদাত বলেন, ‘আমি গত ২ তারিখে ব্যবসায়িক কাজে ভোমরায় আসি। মাকসুদ ভাইয়ের সঙ্গে আমার কিছু ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল। সেগুলো কীভাবে সমাধান করা যায়, এ কারণে ওই দিন তার অফিসে যাই। এ সময় তার ম্যানেজার আমাকে বলে মাকসুদ ভাই ভারতে গেছেন। আপনার মোবাইল দুটো নিয়ে আপনাকে আটকে রাখতে বলেছেন।’

 

 

তিনি আরও বলেন, ‘এ সময়ের মধ্যে তিনি বিভিন্ন লোক মারফত আমাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করেছেন। এরপর মঙ্গলবার তিনি এসে কোনো কথা ছাড়াই এসএস পাইপ দিয়ে আমাকে বেধড়ক পেটান। পেটানোর পরে অনেক গালাগাল করেন। রোববারের মধ্যে টাকা না দিলে মেরে ফেলে নদীতে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন।’

 

 

সাঈদ মোহাম্মদ সাদাত বলেন, ‘মাঝে মধ্যে তারা আমার কাছে মোবাইল ফোন দিত এবং তাদের সামনেই আমি আমার পরিবারের সঙ্গে কথা বলতাম। চট্টগ্রামের ভাষায় কথা বলায় আমার পরিবারের সঙ্গে কী কথা হচ্ছে, সেটি তারা বুঝতে পারেননি। এ কারণে আমি আমার অসুবিধার কথা আমার পরিবারকে জানাতে পারি। আমি সেখানে থাকাকালীন এবং তাদের কাছ থেকে শুনেছি, তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে এভাবে আটকে রেখে টাকা আদায় করে থাকেন। এমনকি ওই অফিসের মধ্যেই অনেককে নির্যাতন করেন।’

 

 

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পরিচিত লোকজনের মাধ্যমে আমরা সাতক্ষীরার স্থানীয় সাংবাদিকদের বিষয়টি জানাই। পরে সাংবাদিক ও পুলিশের সহযোগিতায় আমাকে উদ্ধার করা হয়।’

 

 

ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শুনেছি, চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীকে তার অফিসে টর্চার সেল তৈরি করে আটকে রেখে মারধর করা হয়েছে।’

ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক আহ্বায়ক ও সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান বলেন, ‘মাকসুদ খান ও আমার অফিস একই ভবনে। হঠাৎ জানতে পারলাম তার অফিসে চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীকে ১৫ দিন ধরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। এটি খুব দুঃখজনক ঘটনা। তাদের কারণে ব্যবসাটা এ বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।’

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চট্টগ্রামের একজন ব্যবসায়ীকে ভোমরায় আরেকজন ব্যবসায়ী আটকে রেখেছেন, এমন অভিযোগ এসেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা হয়। পরে রাতে ব্যবসায়ী সাঈদ মোহাম্মদ সাদাত বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করেন। মামলার আসামি মাকসুদ খান ও তার ম্যানেজার মহসিনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’