Search

শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধর থেকে বোনকে বাঁচাতে গিয়ে ভাই খুন

বোনকে মারছিলেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বোনের চিৎকার শুনে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বোনের শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুজন। শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের মির্জাপুর আকন্দ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।


শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধর থেকে বোনকে বাঁচাতে গিয়ে ভাই খুন

নিহতের নাম জয়নাল আকন্দ। তিনি বালিজুড়ী ইউনিয়নের মির্জাপুর আকন্দ বাড়ির মুসলিম আকন্দের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, ১০ বছর আগে ফুলেরা বেগম ও নুর ইসলামের বিয়ে হয়। তারা একে অপরের প্রতিবেশী ছিলেন। বিয়ের পর নুর ইসলামের পরিবার ফুলেরা বেগমকে মেনে নেয়নি। এ নিয়ে প্রায়ই তাকে শারীরিক নির্যাতন করতেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে স্বামী নুর ইসলাম প্রবাসে চলে গেলে নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়।

শনিবার দুপুরে ফুলেরা বেগমের সঙ্গে তার শাশুড়ি নূরজাহানের ঝগড়া হলে ফুলেরা বেগমকে মারধর করতে থাকেন। এ সময় ফুলেরা বেগমের চাচাতো ভাই জয়নাল আকন্দ বোনের বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করতে গেলে ভাইকে দেখে ফুলেরা বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকেন।

বোনকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে বোনের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয় জয়নালের। একপর্যায়ে ফুলেরার শাশুড়ি নূরজাহান তার বাবা ও তিন ভাইকে জানালে তারা এসে জয়নালের ওপর হামলা চালায়। এ সময় জয়নালের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। তাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসলে প্রতিবেশী বাবুল ও আলমগীরকেও পিটিয়ে আহত করে অভিযুক্তরা। জয়নাল আকন্দসহ তিনজনকে উদ্ধার করে মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুরে পাঠান চিকিৎসকরা। সেখানে নেওয়ার পথে জয়নাল আকন্দ মারা যান।

মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মনজুরুল বারী বলেন, নিহত জয়নাল আকন্দের মাথায় আঘাতে ভেতরের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। এ ছাড়া আহত দুজন উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী ফুলেরা বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর শাবু মিয়া, শাশুড়ি নূরজাহান, দেবর সাইফুল ও ননদ সাবিনা আমাকে প্রায়ই শারীরিক নির্যাতন করতেন। আজ দুপুরে আমাকে মেরে ফেলার জন্য মারধর করতে থাকেন। আমার চাচাতো ভাই জয়নাল আকন্দ পুকুরে গোসল করার জন্য আসছিলেন, আমি বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার করলে আমার ভাই আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন।

তিনি বলেন, একপর্যায়ে আমার শাশুড়ি নূরজাহান তার বাবা ও ভাইদের ফোন করে জানালে তারা লাঠি নিয়ে এসে আমার মামাশ্বশুর মেহেদী হাসান আমার ভাই জয়নালকে মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এরপর আমার ভাই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় সে। এ ঘটনায় আমি দোষীদের শাস্তি চাই।

মাদারগঞ্জ মডেল থানার ওসি মাহমুদুল হাসান কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার পর নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। সেই সঙ্গে অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।