শেখ হাসিনার পতনে সম্পৃক্ততার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করল পাকিস্তান
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পৃক্ততার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বালুচ বলেছেন, পাকিস্তানকে দায়ী করার বিষয়টি ভারতের 'বিরক্তিকর চিন্তাভাবনার’ অংশ।

গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হওয়ার পর ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে অভিযোগ করা হয় যে, এই পতনের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এছাড়া শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে বলেছেন, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই তার মায়ের বিরুদ্ধে কাজ করেছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় গতকাল (শুক্রবার) নিয়মিত সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুমতাজ জাহরা বালুচ বলেন, "এই অভিযোগ নির্ভেজাল মিথ্যা। পাকিস্তান বিশ্বাস করে বাংলাদেশের জনগণের তাদের সমস্যা সমাধানের এবং ভবিষ্যত নির্ধারণের সক্ষমতা আছে।"
তিনি আরও বলেন, “পাকিস্তানকে নিয়ে ভারতের যে বিরক্তিকর চিন্তাভাবনা রয়েছে সেটিই এসবে উঠে আসছে। ভারতের নেতা ও মিডিয়া তাদের অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্র নীতির ব্যর্থতার দায় সবসময় পাকিস্তানের উপর চাপায়। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্ক রয়েছে। এটি দিনে দিনে শুধু বেড়ে চলছে। পাকিস্তানের সরকার ও সাধারণ মানুষ বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেছে। আমরা আশা করি বাংলাদেশে দ্রুত স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।”
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য শুরু নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনো আলোচনা হচ্ছে না বলে জানান তিনি। ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য স্থগিত হওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করে ২০১৯ সালে ভারতের জোরপূর্বক জম্মু-কাশ্মীরকে দখল করে নেয়াকে। তিনি দাবি করেন, ভারত বেআইনিভাবে এবং একতরফা পদক্ষেপ হিসেবে এই কাজ করেছে। বাণিজ্য এখনও বন্ধই আছে।
জাহরা বেলুচ ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের বাণিজ্য বন্ধের জন্য আরও কতগুলো কারণ উল্লেখ করেন।
কাশ্মীরের দোদা জেলায় ভারতীয় বাহিনী চার কাশ্মীরি যুবককে হত্যা করেছে। এর নিন্দা জানিয়ে জাহরা বলেন, কাশ্মীরি যুবকদের ওপর এই নৃশংসতা ভারতের বেআইনি এবং নিষ্পেষণমূলক পদক্ষেপের আরেকটি উদাহরণ। দখলিকৃত জম্মু-কাশ্মীরে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ভারতের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানান জাহরা।
একই সঙ্গে কাশ্মীরি জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতা সুরক্ষিত রাখতে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে দখলদার ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে শত শত উগ্রপন্থি বসতি স্থাপনকারী পবিত্র আল আকসা মসজিদে প্রবেশের কড়া নিন্দা জানান জাহরা বেলুচ। তিনি বলেন, ইসলামের পবিত্রতম স্থাপনাকে অপবিত্র করা এবং বৈধ প্রার্থনাকারীদের সেখানে প্রবেশ করতে বাধা দেয়ায় সারাবিশ্বের মুসলিমদের গভীরভাবে আহত করেছে। এটা জেনেভা কনভেনশন এবং জাতিসংঘের অনেক রেজ্যুলুশনের নগ্ন লঙ্ঘন। জেরুজালেমে পবিত্র স্থানগুলোর পবিত্রতা রক্ষার জন্য গুরুত্ব দিয়ে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য নিরাপত্তা পরিষদ সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।#