Search

বিশ্ব-শান্তির লক্ষ্যে সাদ্দামের রাসায়নিক বর্বরতার সহযোগীদের শাস্তি দেয়া জরুরি

হল্যান্ডে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত হাদি ফারজুন্দ রাসায়নিক নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক সংস্থার নির্বাহী পরিষদের ১০৬ তম বৈঠকে ইরাকের প্রয়াত সাদ্দামের রাসায়নিক কর্মসূচির সহযোগীদের গ্রেফতার ও তাদের শাস্তি দেয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন।


বিশ্ব-শান্তির লক্ষ্যে সাদ্দামের রাসায়নিক বর্বরতার সহযোগীদের শাস্তি দেয়া জরুরি

পশ্চিমা মদদে ইসলামী ইরানের ওপর ইরাকের সাদ্দাম সরকারের চাপিয়ে দেয়া ৮ বছরের যুদ্ধে মার্কিন ও পশ্চিমা সরকারগুলোর সহায়তা নিয়ে সাদ্দাম-বাহিনী ইরানের বিভিন্ন অঞ্চলে রাসায়নিক অস্ত্র ও বোমা ব্যবহার করেছে এ জাতীয় অস্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও। বাথিস্টরা ১৯৮০ সালের ১৯ অক্টোবর থেকে ২৫ আগস্ট ১৯৮৮ সালে সীমিত, পরীক্ষামূলক ও ব্যাপক পরিসরের রাসায়নিক হামলা চালায়। এইসব হামলায় দশ হাজারেরও বেশি ইরানি শহীদ, প্রায় এক লাখ ব্যক্তি আহত ও অবিরাম চিকিৎসার মুখাপেক্ষী হন এবং আড়াই লাখ ইরানি অ-গুরুতর পর্যায়ে আহত হন। 

ইরাকের বাথিস্ট সরকার ১৯৮৭ সালের ২৮ ও ২৯ জুন ইরানের জনবহুল সীমান্ত-শহর সারদাশত-এর চারটি এলাকায় রাসায়নিক বোমা হামলা চালায়। এতে ১১০ জন বেসামরিক ইরানি শহীদ ও ৮ হাজার ব্যক্তি বিষাক্ত গ্যাসের সংস্পর্শে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হন।

সারদাশত শহরে যে রাসায়নিক হামলা চালানো হয়েছে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর এমন তীব্র মাত্রার রাসায়নিক হামলার ঘটনা আর কখনও ঘটেনি। 
হাদি ফারজুন্দ এই বৈঠকে লেবানন, গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের নিন্দা জানিয়ে বিশ্ব থেকে রাসায়নিক অস্ত্র নির্মূল সংক্রান্ত কনভেনশন বাস্তবায়নের অপরিহার্যতা ও ইসরাইলের রাসায়নিক অস্ত্রাগারগুলোর ধ্বংসের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

উপকরণ ও সাজ-সরঞ্জামের বাণিজ্য সহজতর করাসহ রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশনের ধারাগুলো থেকে সমস্ত সদস্য দেশকে উপকৃত করার প্রয়োজনীয়তা ছিল নেদারল্যান্ডসে ইরানের রাষ্ট্রদূতের বক্তৃতার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি এ প্রসঙ্গে রাসায়নিক হামলায় আহতদের চিকিৎসার জন্য জরুরি ওষুধের সরবরাহ সংক্রান্ত বাধা ও নিষেধাজ্ঞাগুলোকে এই কনভেনশনের ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছেন।  

ইরানের ওপর ইরাকের সাদ্দাম সরকারের চাপিয়ে দেয়ার যুদ্ধের সময় ৩২ টি বিদেশী কোম্পানি রাসায়নিক বোমা ও গ্যাস তৈরি করতে ইরাকের কাছে রাসায়নিক সামগ্রী বিক্রি করেছে। ইরাক এইসব রাসায়নিক বোমা ও গ্যাস ব্যবহার করেছে ইরানের যোদ্ধা ও বেসামরিক জনগণের ওপর।

ইরান রাসায়নিক অস্ত্রের শিকার কয়েকজন ইরানির মামলা দায়েরের প্রেক্ষাপটে ২০০৩ সালে ইরাককে রাসায়নিক সামগ্রী সরবরাহকারী কয়েকটি কোম্পানির মালিকের বিরুদ্ধে হেগের আদালতে প্রথমবারের মত মামলা করলে ওই আদালত কোম্পানিগুলোকে বিচারের মুখোমুখি করে ও শাস্তি দেয়। সারদাশত অঞ্চলের জনগণের পরামর্শে গঠন করা হয় সারদাশত রাসায়নিক হামলার শিকারদের স্বার্থ রক্ষার সমিতি।

গত ২৯ জুন ছিল সারদাশতে ইরাকি রাসায়নিক হামলার বার্ষিকী। এই দিবসটিকে রাসায়নিক ও জীবাণু অস্ত্র প্রতিরোধ-সংগ্রামের দিবস হিসেবে পালন করা হয়।   এ দিবস পশ্চিমাদের অপরাধযজ্ঞ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের স্মারক এবং গণ-বিধ্বংসী অস্ত্র প্রতিরোধের বিষয়ে ইসলামী ইরানের আন্তরিক প্রচেষ্টাগুলোর প্রচার বা তথ্য জ্ঞাপনেরও সাক্ষ্য বহন করছে।   #