Search

বন্যার ক্ষতির আর দুঃখ থাকল না মতিনের

টানা বর্ষণে ভারতের উত্তর সিকিমে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সৃষ্ট বন্যায় প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। আকস্মিক এ ভয়াবহ বন্যায় হু হু করে পানি ঢুকে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের তিস্তায়। এতে উজানের ঢলে ধেয়ে আসছে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকায়।


বন্যার ক্ষতির আর দুঃখ থাকল না মতিনের
  1.  

দুদিন ধরে পানির তোড়ে রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধায় তিস্তার পেট এখন টইটম্বুর। কোথাও কোথাও নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নয়তো আবার ওপরে উঠানামা করছে। 

এরই মধ্যে নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে পানি ঢুকে পড়ায় সর্বত্রই মাছ ধরার উৎসব শুরু হয়েছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত বরশি-জাল দিয়ে মাছ ধরা শুরু করছে। মাছ ধরার উৎসবে বাদ নেই নারীরাও। 

এমন পরিস্থিতিতে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নে তিস্তা নদীতে ধরা পড়েছে ৩৭ কেজি ৭০০ গ্রামের বাগাড় (বাঘাআইড়) মাছ। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ইউনিয়নের পূর্ব ইচলি গ্রামের আব্দুল মতিনের (৫০) ঝাঁকি জালে ধরা পড়ে বিশাল এ মাছটি। 

পরে মাছটি স্থানীয় জেলেপাড়ার মাছ ব্যবসায়ী আবু মিয়া ৪৮ হাজার টাকায় মাছটি ক্রয় করেন। মাছটি দেখার জন্য সেখানে ভিড় করেন উৎসুক জনতা।

আব্দুল মতিন বলেন, ঝাঁকি জাল দিয়ে মাছ ধরার সময় হঠাৎ করে বাগাড় মাছটি জালে আটকা পড়ে। মাছটি ওপরে তুলে আনতে অনেক কষ্ট হয়েছে। পরে ৪৮ হাজার টাকায় মাছটি বিক্রি করেছি। এতো বড় মাছ পাওয়ার পর বন্যার ক্ষতির দুঃখ আর থাকল না। এমন মাছ ধরতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে। 

লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদি বলেন, বন্যার পানিতে এমন বড় বড় মাছ প্রায়ই ধরা পড়ে। বড় মাছের আশায় গ্রামের নারী-পুরুষ সবাই কষ্টের মধ্যেও মাছ ধরতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে নিরাপদে থাকার জন্য সবাইকে সতর্ক করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে একই দিন‌ সকালে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তা নদীতে এক জেলের জালে ৭২ কেজি ওজনের একটি বাগাড় মাছ ধরা পড়েছে। মাছটি ৭০ হাজার টাকা বিক্রি করা হয়। উপজেলার উত্তর ডাউয়াবাড়ি গ্রামে তিস্তা নদীর চরাঞ্চল থেকে মাছটি ধরেন কৃষক মোহসিন আলী। তিনি ওই গ্রামের ইছাহাক আলীর ছেলে।

এভাবেই চরাঞ্চলের বাজারগুলোতে সোভা পাচ্ছে বড় বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। অনেকেই জীবনের প্রথম এতো বড় মাছ দেখে অভিভূত। বয়োবৃদ্ধদের দাবি, ভারতের গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণ করে তিস্তার পানি এক তরফা ব্যবহার করায় তিস্তার মাছ কমে গেছে। আগে প্রায় সময় এমন বড় বড় মাছ ধরা পড়ত জেলেদের জালে।