নৌকায় ৫৭ সেকেন্ডে ৪৩ সিল মারা সেই ছাত্রলীগ তুলে নেওয়ার অভিযোগ
লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের শূন্যপদে উপনির্বাচনে ব্যালট বইয়ে নৌকা মার্কায় অনবরত সিল মারার ঘটনায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আজাদ হোসেনকে ‘পুলিশ’ পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার রাতে আজাদের বড় ভাই যুবলীগ নেতা আলমগীর হোসেন ও চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম মাসুদুর রহমান মাসুদ এ অভিযোগ করেছেন। ৫৭ সেকেন্ডে ৪৩ ব্যালটে নৌকা প্রতীকে অনবরত সিল মারা আজাদ চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে বলে দাবি করা হয়।
এ বিষয়ে আজ রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বক্তব্য জানতে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. তারেক বিন রশিদ ও চন্দ্রগঞ্জ থানার ওসি তহিদুল ইসলামের ফোনে একাধিকবার কল ও এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি।
আজাদ চন্দ্রগঞ্জ থানা ও দিঘলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি। তাকে অন্য এক ঘটনায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তিনি সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের দক্ষিণ খাগুড়িয়া গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে।
ছাত্রলীগ নেতা মাসুদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত আজাদ।
নৌকায় অনবরত সিল মারার ভিডিও ভাইরালের ঘটনার পর থেকেই মাসুদের বাসায় আজাদ আত্মগোপনে ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আজাদের বড়ভাই আলমগীর হোসেন নিজেকে ঢাকার পল্টন বায়তুল মোকাররম ইউনিট যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দাবি করে বলেন, ‘সিল মারার ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর মোবাইল ফোন রেখে আজাদ আত্মগোপনে চলে যায়। সে কোথায় ছিল, কিভাবে ছিল কিছুই জানা ছিল না। খবর পেয়েছি আজ শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা মাসুদের বাসা থেকে পুলিশ পরিচয়ে তাকে তুলে নিয়ে গেছে।
চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন, ‘আমি বাড়ি ছিলাম না। বাড়ি থেকে জানানো হয়েছে, আজাদ ভোরে আমাদের বাড়িতে আসে। পরে তাকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
মাসুদের বোন ও চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য শাহানারা বেগম রুমি সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুলিশ পরিচয়ে আমাদের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। তারা আমাদের মোবাইল ফোন সেট নিয়ে গেছে।
সঙ্গে আজাদকে তুলে নিয়ে যায়।’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অ্যাপস) মো. হাসান মোস্তফা স্বপনকে কল করলে তিনি চন্দ্রগঞ্জ থানার ওসির সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। যদিও ওসিসহ দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ফোনে পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, ৫ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের উপনির্বাচন হয়। এরমধ্যে দিঘলী ইউনিয়নের দক্ষিণ খাগুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আজাদ ব্যালট পেপারে নৌকা মার্কায় অনবরত সিল মারেন। এ ঘটনার ৫৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে তোলপাড় হয়। এ ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে গেজেট প্রকাশ স্থগিত রেখেছে নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার ও উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাকে পৃথকভাবে ঘটনাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। তদন্ত শেষে ইসিসহ সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।