ডাস্টার দিয়ে পিটিয়ে শিক্ষার্থীর হাত ভেঙে দিলেন শিক্ষক
পিরোজপুরে মারিয়া আক্তার (৯) নামে তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ডাস্টার দিয়ে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিউটি রানী এদবরের বিরুদ্ধে। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) পিরোজপুর সদর উপজেলার ১১৩নং পূর্ব শিকদার মল্লিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যাহ্ন বিরতির পরে তৃতীয় শ্রেণির ক্লাসে এ ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের শ্রেণি শিক্ষকের অভিযোগ পেয়ে এ কাণ্ড ঘটায় সহকারী শিক্ষক বিউটি বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মারিয়া আক্তার (৯) নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠি ইউনিয়নের উদয়তার গ্রামের মো. মামুন বেপারির মেয়ে এবং ১১৩নং পূর্ব শিকদার মল্লিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। অভিযুক্ত শিক্ষক বিউটি রানী এদবর ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক ও পিরোজপুর সদর উপজেলার পূর্ব শিকদার মল্লিক গ্রামের বাসিন্দা।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানায়, বিউটি ম্যাডাম ক্লাসে এসে আমার কাছে পড়া জিজ্ঞেস করলে আমি ম্যাডামকে ওই দিনের পাঠ্য পড়া বলি। তখন আমার ক্লাসম্যাট রিপা ম্যাডামকে আমি পড়া না পড়ে খেলাধুলা করেছি বলে নালিশ দেয়। তখন ম্যাডাম আমাকে ডাস্টার দিয়ে পেটায়। এতে আমার হাত ভেঙে যায়। তারপর বাড়িতে আসলে আমাকে নিয়ে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। সে ডাক্তার আমার হাতে ব্যান্ডেজ করে দেয়। এ ঘটনায় অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের অভিযোগ এর আগে বহুবার ম্যাডাম ছাত্রছাত্রীদের এ রকম বেধড়ক পিটিয়েছে। এর কোনো বিচার হয়নি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক বিউটি রানী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমার ভুল হয়েছে, আমাকে আপনারা ক্ষমা করে দেন। আর কোনোদিন এমন হবে না।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশিদা খানম জানান, স্কুল ছুটির পরে আমি বাড়ি যাওয়ার পথে আমার শিক্ষক পঙ্কজ বড়াল আমাকে বিষয়টি মুঠোফোনে জানায়। আমি ওই ম্যাডামকে ঘটনাটি জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, শিক্ষার্থী মারিয়াকে ক্লাসের পড়া লিখতে বললে সে লিখতে না পারায় তাকে ডাস্টার দিয়ে আঘাত করলে তার হাত ভেঙে যায়। প্রধান শিক্ষক রাশিদা খানম আরও জানান, আমি আজ সকালে স্কুলে আসার পথে ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়ে তার খোঁজখবর নিয়ে আসছি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমিনুল ইসলাম জানান, তিনি ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সবুজ কান্তিকে ওই বিদ্যালয়ে পাঠিয়েছি। আমাকে প্রতিবেদন দিলে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ সাব্বির সাজ্জাদ জানান, আমি অফিসের বাইরে আছি। আপনার মাধ্যমে বিষয়টি শুনলাম। ঘটনার বিষয়ে আমি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে জেনে আইনি ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কুমারেশ চন্দ্র গাছি জানান, ওই বিদ্যালয়ে আমার শিক্ষা অফিসার (এ টি ও) সাহেব গিয়েছিলেন। ওনি রিপোর্ট দিলে আমি দু-একদিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেব।