Search

টিউশন মিডিয়ার নামে প্রতারণা, টার্গেট নবীন শিক্ষার্থীরা

‘টিউশন দিচ্ছি, গৃহ শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছি’— এমন নানা ধরনের বিজ্ঞাপনে সয়লাব ঢাকা শহর তথা পুরান ঢাকার ল্যাম্পপোস্ট, রাস্তার দেয়াল থেকে শুরু করে ফেসবুকের দেয়াল পর্যন্ত। লোভনীয় টিউশনের বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ছেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থী। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের কেন্দ্র করে বছরের শুরুতেই জমজমাট হয়ে ওঠে টিউশন মিডিয়ার নামে প্রতারণার ফাঁদ।


টিউশন মিডিয়ার নামে প্রতারণা, টার্গেট নবীন শিক্ষার্থীরা

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেয়ালে পোস্টারিং করে এবং ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে নামে-বেনামে বিভিন্ন আইডি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রুপগুলোতে ৫০ শতাংশ কমিশনের শর্তে লোভনীয় টিউশনের অফার দেয় বেশ কিছু অসাধু টিউশন ব্যবসায়ীরা। নিজ খরচ চালানোর তাগিদে এসকল টিউশন মিডিয়ার কাছে ধরনা দিয়ে পরিবার থেকে আনা নিজের হাত খরচের টাকার পুরোটাই খোয়াতে হচ্ছে নিম্মবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের। বিশেষ করে ঢাকায় নতুন আসা অনেক শিক্ষার্থীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই এসব মিডিয়ার খপ্পরে পড়ে মোটা অংকের টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। প্রতারিত হওয়ার তালিকায় রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকার নামকরা বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আরও জানা যায়, মিডিয়াগুলোয় টিউশন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রথমেই নিবন্ধন ফি’র নামে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা আদায় করা হয়। পরে আজ-কাল করে টিউশন দেয়ার নামে ঘুরাতে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে টিউশন জোগাড় করে দেয়া হলেও সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রথম মাসের সম্মানীর ৫০-৭০ ভাগই আদায় করে নেয়া হয় টিউশনিতে যোগ দেয়ার আগে। এর মধ্যে অনেক অভিভাবক দু-এক সপ্তাহের মধ্যে নানা ছুতোয় গৃহশিক্ষককে বাদ দিয়ে দিলে সবই হারাতে হয়।

ভুক্তভোগী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানান, গত কয়েকদিন আগে ফেসবুকে 'Shamim Ahmed' নামক একটি আইডিতে একটি টিউশন অফার দেখে তার সাথে যোগাযোগ করলে অগ্রীম এক হাজার টাকা দিতে বলেন। পরে ওই টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠানোর পর ওই ব্যক্তির সাথে আর যোগাযোগ করতে পারেননি। সব জায়গা থেকে ব্লক মেরে দিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া আরেক শিক্ষার্থী জানান, টিউশন পাওয়ার জন্য আগে থেকেই তাদের মিডিয়া ফি দিয়ে দিতে হয় কিন্তু সেই টিউশন পরে গিয়ে কনফার্ম না হলে আমরা আমাদের মূলধন, শ্রম সবই হারিয়ে ফেলতে হয়। টিউশন মিডিয়াগুলো আর আমাদের সাথে যোগাযোগ করে না।

শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণাতেই থেমে নেই এসকল বেনামী টিউশন মিডিয়া। ছেলে-মেয়ের জন্য ভাল শিক্ষক দেয়ার দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হতে অনেক সময় বিভিন্ন মিডিয়ার দ্বারস্থ হোন অভিভাবকেরা। পুরান ঢাকার এক অভিভাবক জানান, ছেলের জন্য একটি টিউশন মিডিয়ার কাছে যাই তারা টিচার দেয়ার জন্য ৫০০ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি দাবি করে। এডভান্স টাকা দেয়ার পরেও তারা আর আমাকে টিচার খুঁজে দেয়নি। তাদেরও আর খোঁজ পাইনি।

ভুক্তোভোগী শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের দাবি, অন্য কেউ যেন এমন প্রতারণার শিকার না হয় ও এসব ভুয়া মিডিয়াগুলোর দৌরাত্ম বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান তারা।