অভাবের তাড়নায় গাড়ি নিয়ে বের হতে গিয়ে পেট্রলবোমায় দগ্ধ সবুজ
অবরোধে রাজধানীর বনশ্রীর মেরাদিয়া বাঁশপট্টি এলাকায় অছিম পরিবহন নামে একটি বাসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে মো. সবুজ মিয়া (৩০) নামের একজন বাস চালক দগ্ধ হয়েছেন।

আজ রবিবার সকাল ৭টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে। সবুজ মিয়া রমজান পরিবহনের একজন চালক।
পরে তাকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আজ সকালের দিকে সবুজ নামে দগ্ধ অবস্থায় বাসের একজন চালক জরুরি বিভাগে আসেন। তার শরীরের ২৮ শতাংশ দগ্ধ রয়েছে এবং তার শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। বর্তমানে জরুরি বিভাগে তার চিকিৎসা চলছে।
দুপুর ১টার দিকে হাসপাতালে সবুজের স্ত্রী রুশেদা বেগম জানান, ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার গোদারিয়া তাদের গ্রামের বাড়ি। বর্তমানে মেরুল বাড্ডার আনন্দনগরে ভাড়া বাসায় থাকেন তারা। নিত্যপণ্যের চড়া বাজারে কোনো রকমে টেনেটুনে দুই সন্তান নিয়ে সংসার চলে তাদের। তার ওপর একটি সমিতির কিস্তি আছে।
প্রতি সোমবার দেড় হাজার টাকা করে দিতে হয়। এই কিস্তির টাকা জোগাড় করতে অবরোধের মধ্যে বাস নিয়ে বের হতে গিয়ে দগ্ধ হন তিনি।
রুশেদা বলেন, “আজ উনারে (সবুজ) বলছিলাম, এই অবরোধে রিস্ক নিয়া কাজে যাওয়ার দরকার নাই। কালকের কিস্তির কাউরতে করজা কইরা দিয়া দিবোনে। উনি বললেন, ‘যাই কাজে, করজা করলে আবার তো দিতেই হইব।
তাই যতক্ষণ পারি গিয়া চালাইয়া (বাস) আসি। গেঞ্জাম অইলে বাসায় চইলা আমুনি।’ পরে কাজের লাইগা বাসা থিকা বাইর হন তিনি। এরপর ১৫-২০ মিনিট পর মোবাইলে খবর আইলো আগুনে পুইড়া গেছেন তিনি।”
দগ্ধ চালকের স্ত্রী আরো বলেন, ‘খবর পায়া ঘটনাস্থল থিকা তারে উদ্ধার কইরা এইখানে আসি। সকালে বাড্ডা থিকা তিনি অছিম পরিবহনে কইরা মেরাদিয়া যাইতেছিলেন। সেইখানে রমজান পরিবহন রাখা আছিল। মেরাদিয়ায় ওই বাস থিকা নামার সময় বাসের গেটে যাইতেই এই আগুন লাগে। আমার স্বামী তো রাজনীতি করেন না, পরিশ্রম কইরা খান। আমার স্বামীর সারা শরীর পুইড়া গেছে। এই দায়ভার কেডা নিবো?’
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ আটক হয়নি বলে জানিয়েছেন খিলগাঁও থানার প্যাট্রল পরিদর্শক ইউসুফ আলী চৌধুরী। ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলার গোদারিয়া গ্রামের সুলতান মিয়ার ছেলে সবুজ। পাঁচ বছর ধরে তিনি বাসচালক হিসেবে কাজ করেন। এর আগে সিএনজি চালাতেন বলে জানান তার স্ত্রী রুশেদা