Search

সাগরদাঁড়িতে মধুমেলা ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা

মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যশোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সাগরদাঁড়িতে ১৯ জানুয়ারি থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত নয়দিনব্যাপী এ মধুমেলার আয়োজন করা হয়েছে।


সাগরদাঁড়িতে মধুমেলা ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা

কামরুজ্জামান রাজু, কেশবপুর (যশোর): মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়িতে ১৯ জানুয়ারি থেকে নয়দিনব্যাপি শুরু হচ্ছে মধুমেলা। এ মেলা উপলক্ষে সাগরদাঁড়িকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। কপোতাক্ষ নদ পাড়ের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লাখ লাখ মধুভক্তের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে উঠবে মেলা প্রাঙ্গণ। কবির জন্মভূমির স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদ পাড়, জমিদার বাড়ির আম্রকানন, বুড়ো কাঠবাদাম গাছতলা, বিদায় ঘাট, মধুপল্লীসহ মেলা প্রাঙ্গণে ইতিমধ্যেই আসতে শুরু করেছে দর্শনার্থীরা। মধুমেলা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপনের লক্ষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি স¤পন্ন করা হয়েছে। মেলা উপলক্ষে এলাকার মানুষের ভেতর দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা।
জানা গেছে, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যশোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সাগরদাঁড়িতে ১৯ জানুয়ারি থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত নয়দিনব্যাপী এ মধুমেলার আয়োজন করা হয়েছে। ১৯ জানুয়ারি (শুক্রবার) বিকেলে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস’র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চেয়ার অধ্যাপক প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে মধুমেলার উদ্বোধন করবেন।
সরেজমিন সাগরদাঁড়ি ঘুরে দেখা যায়, মহাকবির ২০০তম জন্মবার্ষিকী ঘিরে এবারের মধুমেলায় সকলের ভেতর এক ধরনের উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। মেলা প্রাঙ্গণের বিভিন্ন প্যান্ডেলসহ শিশু বিনোদনের সরঞ্জাম প্রস্তুত করা হচ্ছে। স্থানীয় দোকানদারদের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজাচ্ছেন। এ ছাড়া যশোর শহরসহ কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মধুমেলার ফেস্টুন টাঙানোসহ প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে। দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য নয়দিনব্যাপি সাগরদাঁড়ির মধুমঞ্চে আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পাশাপাশি প্যান্ডেলে সার্কাস, যাদু প্রদর্শনী ও মৃত্যুক‚প থাকছে। রয়েছে শিশুদের জন্য নাগরদোলাসহ বিভিন্ন আয়োজন। এছাড়াও থাকছে কুটির শিল্পসহ গ্রামীণ পসরা।
মধুমেলা শুরুর আগেই মেলা প্রাঙ্গণের প্রস্তুতি দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন অসংখ্য মানুষ। সাগরদাঁড়ির আলোকচিত্র শিল্পী মুফতি তাহেরুজ্জামান তাছু বলেন, ‘মধুমেলা উপভোগ করার জন্য ইতিমধ্যে সাগরদাঁড়ি এলাকাসহ চারপাশের গ্রামে গ্রামে আত্মীয়-স্বজন আসতে শুরু করেছে। অনেকেই মেয়ে-জামাই, বন্ধু-বান্ধবসহ অতিথিদের দাওয়াতও দিয়েছেন। প্রত্যেকটি বাড়িতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এবারের মেলায় লাখ দর্শনার্থী ও মধুপ্রেমীদের সমাগম ঘটবে।’
মধুপল্লীর কাস্টডিয়ান মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘মধুমেলা উপলক্ষে মধুপল্লী সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। দর্শনার্থীরা মধুপল্লীতে কবির ভাস্কর্য, প্রসূতিস্থল, কাছারিবাড়ি, স্মৃতি বিজড়িত আসবাবপত্র ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র দেখতে পারবেন।’
মধুসূদন একাডেমির পরিচালক কবি ও মধুসদন গবেষক খসরু পারভেজ বলেন, ‘অন্য বছরের থেকে এবার মেলা দুইদিন বাড়িয়ে নয়দিন করা হয়েছে। এতে আলোচকদের মাধ্যমে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত স¤পর্কে দর্শনার্থীরা আরও বেশি জানার সুযোগ পাবেন। মেলার উদ্বোধকের নিকট এবারও সাগরদাঁড়িতে মহাকবির নামে সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।’
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মধুমেলা উদ্যাপন কমিটির সদস্য সচিব তুহিন হোসেন বলেন, ‘সাগরদাঁড়িতে মধুমেলা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপনের লক্ষে সকল ধরনের প্রস্তুতি স¤পন্ন করা হয়েছে। মধুমঞ্চে নয়দিনব্যাপী কেশবপুর ও যশোরের শিল্পীগোষ্ঠীর পাশাপাশি দেশবরেণ্য কবি, সাহিত্যিক ও শিল্পীরা অংশ নেবেন। এবারও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকেল মধুসূদন পদক প্রদান করা হবে। মেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি প্রশাসন ব্যাপক তৎপর থাকবে।
যশোর জেলা প্রশাসক ও মেলা উদযাপন কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার মঙ্গলবার বিকেলে সাগরদাঁড়িতে মেলার মাঠ পরিদর্শনে এসে বলেন, অশ্লীলতা মুক্ত মধুমেলা অনুষ্ঠিত হবে। দর্শনার্থীদের মধুমেলা উপভোগ করতে যাতে কোন অসুবিধা না হয় তার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। #