ট্রেনে পা হারানো কেশবপুরের শাকিলের চিকিৎসা অর্থাভাবে বন্ধ হতে চলেছে

কামরুজ্জামান রাজু, কেশবপুর (যশোর): ট্রেনে পা হারানো কিশোর শাকিল খানের (১২) চিকিৎসা অর্থাভাবে বন্ধ হতে চলেছে। সংসারের ঘানি টানার পাশাপাশি ছেলের চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে ওই অসহায় পরিবারকে। হাসপাতালে ছেলেকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে বাবা ট্রাক শ্রমিক শফিকুল ইসলাম তার কাজও হারিয়েছেন। শাকিল খান যশোরের কেশবপুর উপজেলার মধ্যকুল গ্রামের ট্রাক শ্রমিক শফিকুল ইসলাম খানের ছেলে। শাকিলের পরিবার মধ্যকুল স্লুইস গেটের পাশে সরকারি জায়গায় একটি ছাবড়া ঘরে বসবাস করে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, পরিবারের সদস্যদের না জানিয়ে সম্প্রতি শাকিল খান বাড়ি থেকে যশোর শহরে চলে যায়। সে ট্রেন স্টেশনে গিয়ে খুলনাগামী একটি ট্রেনে উঠে পড়ে। পথিমধ্যে ট্রেনে থাকা কিছু কিশোর শাকিলকে নওয়াপাড়া এলাকায় ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এ সময় শাকিলের বাম পা ট্রেনের চাকার নিচে গিয়ে হাটুর নিচ থেকে দ্বিখন্ডিত হয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে শাকিলের প্রায় ৩ মাস চিকিৎসা চলে। পা হারা ছেলের পাশে থেকে হাসপাতালে দেখাশোনা করতে গিয়ে ট্রাক শ্রমিক শফিকুল ইসলামের কাজও বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে চিকিৎসকের পরামর্শে বাড়িতে রেখে শাকিল খানের চিকিৎসা চলছে। প্রতিদিন ওষুধ কিনতে লাগছে প্রায় ২০০ টাকা। সংসার চালানোর পাশাপাশি ছেলের চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে কাজ হারা ট্রাক শ্রমিক শফিকুল ইসলাম এখন দিশেহারা।
শাকিল খানের মা সালমা খাতুন বলেন, ‘ছেলের পায়ের কাটা স্থানের মাঝখানে এখনও ঘা রয়েছে। ঠিকমত ওষুধ কিনতে পারছি না। ছেলের ওষুধ কিনতে অন্যের নিকট হাত পাততে হচ্ছে। প্রতিদিন ওষুধ খাওয়াতে পারলে আমার বাবা তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যেত। শাকিলকে ক্রাচে ভর দিয়ে বাড়িতে চলাফেরা করতে হচ্ছে।’
শাকিলের বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, ডাক্তার পরামর্শ দিয়েছেন আগামী ৩ মাস একনাগাড়ে ওষুধ খাওয়াতে হবে। প্রতিদিন ছেলের জন্য ওষুধ কিনতে লাগছে ১৯৫ টাকা। কিন্তু এত টাকা জোগাড় করা আমার পক্ষে কোন ভাবেই সম্ভব হচ্ছে না।’ যে কারণে পা হারা ছেলের চিকিৎসার জন্য দেশের দানশীল ব্যক্তিদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য আকুতি জানিয়েছেন শাকিল খানের মা ও বাবা। ০১৭২৯-৯২২১৬৭ নম্বরে (বিকাশ-পার্সোনাল) সাহায্য পাঠানো জন্য যোগাযোগ করা যেতে পারে।