Search

ভারি বৃষ্টিতে যশোর শহরে জলাবদ্ধতা

যশোরে ২২৮ মিলিমিটার ভারি বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। শহরের নিচু অঞ্চলে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও ঢুকে পড়েছে পানি।


ভারি বৃষ্টিতে যশোর শহরে জলাবদ্ধতা

অধিকাংশ রাস্তায় গোড়ালি, আবার কোথাও হাঁটুপানি জমেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শহরবাসী। তাদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত নালা-ব্যবস্থাপনা না থাকা, বিদ্যমান নালার অচলাবস্থা এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই পৌরসভার অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। রোববার রাত ১০টা থেকে ভারিবর্ষণ শুরু হয়। থেমে থেমে হওয়া বজ সহ এই বৃষ্টিপাত চলে সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত। তবে সূর্যের দেখা মিলেছে দেড়টার পর।

এদিকে, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) চাঁচড়ার গ্রিড ফেল করার সঙ্গে চাঁচড়া উপকেন্দ্রে পানি উঠায় বন্ধ করা হয় বিদ্যুৎ সংযোগ। ফলে সোমবার ভোর ৪টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় ছিল শহরের ৫৫ হাজার গ্রাহক। যশোর বিমান বাহিনীর আবহাওয়া অফিস জানায়, সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ২২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শহরের নিচু এলাকায় পানি জমে রীতিমতো বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অনেক স্থানে হাঁটু সমান পানি, কোথাও কোথাও কোমর পানি। বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। শহরের বহু রাস্তা ও গ্রামাঞ্চলের মাঠঘাট পানিতে থই থই করছে। ভেসেছে পুকুর ও মাছের ঘের। ড্রেনের ময়লা-আবর্জনা মিশ্রিত নোংরা পানি উপচে পড়েছে সড়কে। সেই পানি ঢুকে পড়েছে বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তিতে আছেন পৌরসভার ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শংকরপুর এলাকার বাসিন্দা আলতা বানু বলেন, কয়েকশ বাড়িতে পানি উঠেছে। টিউবওয়েলের কিছু অংশ ডুবেছে। ফলে বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছি আমরা। রান্নাঘরেও পানি প্রবেশ করায় রান্নাও বন্ধ।’ শহরের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহরের ভেতর দিয়ে ভৈরব ও মুক্তেশ্বরী নামে দুটি নদ-নদী বয়ে গেছে। এর মধ্যে ভৈরব নদ দিয়ে শহরের উত্তরাংশ ও মুক্তেশ্বরী নদী দিয়ে শহরের দক্ষিণাংশের পানি নিষ্কাশিত হয়। কিন্তু গত দেড় দশকে শহরের দক্ষিণাংশের পানি মুক্তেশ্বরী নদী দিয়ে নামতে পারছে না। পয়ঃনিষ্কাশন নালার মাধ্যমে শহরের পানি হরিণার বিল দিয়ে মুক্তেশ্বরী নদীতে যেত। কিন্তু ২০১০ সালে হরিণার বিলে যশোর মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়। এরপর আশপাশে আরও অনেক স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এতে বিল দিয়ে পানি আগের মতো নিষ্কাশিত হতে পারছে না। ওই পানি বের করার জন্য খালের মাধ্যমে মুক্তেশ্বরী নদীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে হবে। কিন্তু পৌরসভা গত দেড় দশকেও সেই উদ্যোগ নিতে পারেনি।