Search

বাংলাদেশে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফ বলছে,বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ১৪ হাজারের বেশি শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়।শিশুদের মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ পানিতে ডুবে যাওয়া,যা এটিকে একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যায় পরিণত করেছে।


বাংলাদেশে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে

কপোতাক্ষ ডেস্ক : ইউনিসেফ আরো বলছে, বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৪০টি শিশু পানিতে ডুবে মারা যায় ।  এছাড়াও পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হলো পানিতে ডোবা। অথচ সহজ কিছু পদক্ষেপ নিলেই শিশুদের পানিতে ডুবে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, শিশুরা যখন পানির আশেপাশে থাকে তখন তাদের প্রতি বিশেষ নজর রাখা, উন্মুক্ত জলাশয়ের চারপাশে বেড়া দেওয়া এবং পানির বড় যেকোনো পাত্র ঢেকে রাখা। এছাড়াও শিশুদের বয়স ছয় বছর হওয়ার পর সাঁতার শেখানো।

বিভিন্ন গবেষনায় দেখা যাচ্ছে দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে এই ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশে প্রতি বছর ২৫ জুলাই পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ দিবস পালনের মাধ্যমে সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও সিআইপিআরবির কার্যক্রমের ফলে পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার কমে এসেছে। 

শিশু মৃত্যুরোধের ক্ষেত্রে সিআইপিআরবি রীতিমতো দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দেশর উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী, বরগুনায় বিভিন্ন এলাকায় তারা আঁচল নামে ডে কেয়ার সেন্টার চালু করেছে। সপ্তাহে ৬ দিন সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শিশুদের আঁচল মায়ের কাছে রেখে গৃহস্থালি কাজ করেন অভিভাবকরা। আর আঁচল মা  ২৫ জন শিশুদের সাথে ছড়াগান, নৃত্য ও খেলার ছলে তাদের মেধা বিকাশে কাজ করছেন।এতে  শিশুরা নিরাপদে থাকার পাশাপাশি ঘটছে,মেধার বিকাশও। এমনটাই জানালেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপক লিপিকা রানী।

স্থানীয় পর্যায়ের দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষনে দেখা যাচ্ছে পরিবারের অসচেতনতায় পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে।এসময়ে পরিবারের সদস্যরা অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায়, তাদের অগোচরেই পরিবারের ছোট্ট  খুদে সদস্য উন্মুক্ত ডোবা-নালা-পুকুর-খালবিল-জলাশয়ে যায় এবং দুর্ঘটনার শিকার হয়।

তাই, ৬-১০ বছর বয়সী শিশুদের দক্ষ প্রশিক্ষকের মাধ্যমে নিরাপত্তা বেষ্টনী কিক বোর্ডের মাধ্যমে সাঁতার শেখানো হচ্ছে উপকূলীয় জেলার বিভ্ন্নি এলাকায়। এছাড়া কোনো শিশু পানিতে ডুবে গেলে, অন্য শিশুরা কীভাবে তাদের উদ্ধার করবে সেই পদ্ধতিও হাতে কলমে শেখানোর কথা জানালেন সুইম সেইফ এর সুপারভাইজার মুরাদ হোসেন।

সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চের গবেষণায় দেখা গ্যাছে,শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র আঁচলে রেখে ৮০ভাগ ও সাঁতার শিখিয়ে ৯৫ ভাগ শিশুর পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ সম্ভব।চলতি বছরে এ উপজেলায় ২হাজার ৫শ শিশুকে সুরক্ষিত রাখছে আঁচল ডে কেয়ার সেন্টার।১হাজার ৭শ শিশুকে সাঁতার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে প্রজেক্ট ভাসা।গত বছর এ উপজেলায় ১৮ শিশুর পানিতে ডুবে মারা যায়।চলতি বছরে পানিতে ডুবে ৫জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইপিআরবি প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর দীপিকা দাস।জনসংখ্যার অনুপাতে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি শিশু পানিতে ডুবে মারা যায় বাংলাদেশে। এমনকি রোগে ভুগে মৃত্যুর চেয়ে পানিতে ডুবে মৃত্যুর হারই বেশি।তাই সচেতনতার কোন বিকল্প নেই  বলে মনে করছেন গবেষকরা।#