Search

ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্র সংস্কারই প্রধান চ্যালেঞ্জ: প্রধান উপদেষ্টা

দেশে সামাজিক ন্যায়বিচার ও রাষ্ট্র সংস্কারই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এজন্য সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।


ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্র সংস্কারই প্রধান চ্যালেঞ্জ: প্রধান উপদেষ্টা

শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে ‘বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন (বিওবিসি) ২০২৪’ তৃতীয় আসরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা একথা বলেন।

ডা. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, ও বাক-স্বাধীনতার। দেশে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্র সংস্কারই সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ। এজন্য সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে।’

এই সভ্যতা সবাইকে ব্যর্থ করেছে মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘শুধু পরিবেশের দিক দিয়েই নয়, মানুষ মুনাফার পেছনে মরিয়া হয়ে উঠাও এর জন্য দায়ী।’

‘আসুন, আমরা থ্রি জিরোর ভিত্তিতে নতুন একটি সভ্যতা তৈরি করি, যেখানে সম্পদকে কুক্ষিগত করা হবে না। সম্পদ সবার মাঝে সমানভাবে বণ্টন হবে।’

জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে তরুণদের ভূমিকার উল্লেখ করেন ড. ইউনূস। বলেন, ‘আমরা মাত্র ১০০ দিন আগে একটি ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছিলাম। এটি ছিল ছাত্র-জনতার একটি বিপ্লব, যা গত ১৬ বছর ধরে শাসন করা এক ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাত করেছে। এজন্য এক হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী, শ্রমিক এবং সাধারণ প্রতিবাদকারীকে প্রাণ দিতে হয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় ২০ হাজার ছাত্র-জনতা।’

‘এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মাধ্যমে আসুন আমরা তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করি, যারা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, যারা চিরদিনের জন্য তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, দৃষ্টিশক্তি এবং শারীরিক সক্ষমতা হারিয়েছেন এবং যারা এখনো জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন।’

আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনে বিদেশি অতিথিদের উদ্দেশ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের বলবো, আপনারা রাস্তাগুলো ঘুরে দেখুন। বাংলাদেশের তরুণদের মনের ভাষা বুঝতে পারবেন।’

‘আমি আপনাদের আহ্বান জানাবো, নতুন একটি বিশ্ব গড়ার বিষয়ে ভাবতে। যেভাবে আমাদের তরুণরা আমাদের নতুন একটি বাংলাদেশের বিষয়ে ভাবতে শিখিয়েছেন।’

বাংলাদেশের দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ আজ পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছে মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘মানবাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ। তাই এ বছরের সংলাপের প্রতিপাদ্য একটি ভঙ্গুর বিশ্ব। আমি বিশ্বাস করি, প্রতিটি সমস্যার সমাধান রয়েছে, যদি আমরা ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যাই।’

সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ, বলিভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ফার্নান্দো রামিরেজ, সিজিএসের চেয়ারপারসন মনিরা খান বক্তব্য দেন। অধিবেশন সঞ্চালনা করেন সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।

ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিন দিনব্যাপী সম্মেলন চলবে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত। বে অব বেঙ্গল কনভারসেশনে এবারের থিম ‘এ ফ্র্যাকচারড ওয়ার্ল্ড’। এতে ৮০টিরও বেশি দেশ থেকে ২০০ জনের বেশি আলোচক, ৩০০ জন প্রতিনিধি এবং ৮০০ জন অংশ নিচ্ছেন।