দুর্ঘটনায় আহত ৫৩ হাজার, বিআরটিএর তথ্যে ৭ হাজার
দেশের সাতটি হাসপাতালে আহত রোগী রয়েছেন ৫৩ হাজার ২০৭ জন। কিন্তু বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রতিবেদন অনুযায়ী আহত রোগী সাত হাজার ৪৯৫ জন। বিআরটিএর এই প্রতিবেদনকে অসম্পূর্ণ উল্লেখ করে সরকারি উদ্যোগে সড়ক দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ডাটা ব্যাংক চালুর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী হলে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত ‘এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে সরকারি উদ্যোগে প্রাথমিক উৎস থেকে সড়ক দুর্ঘটনার সঠিক ডাটা ব্যাংক চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
তিনি বলেন, বিআরটিএর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩ সালে পাঁচ হাজার ৪৯৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচ হাজার ২৪ জন নিহত, সাত হাজার ৪৯৫ জন আহত হয়েছে। এই সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য বিআরটিএ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এবং জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি করা হলেও এখানে কোনো হাসপাতালের তথ্য নেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান সঠিক এবং নির্ভুল মর্মে দাবি করলেও আমাদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু হাসপাতাল) ২০২৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ১৪ হাজার ৩৫৭ জন রোগী জরুরি বিভাগে ভর্তি হয়েছে। একই সময়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নয় হাজার ৮৭৯ জন, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নয় হাজার ২৯৩ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চার হাজার ৭৮৪ জন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের তিন হাজার ৫৬৩ জন, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ছয় হাজার ৭৪৮ জন, ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ খানপুর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চার হাজার ৫৮৩ জন সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ভর্তি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের মাত্র এই সাতটি হাসপাতালে ২০২৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে জরুরি বিভাগে ভর্তির তথ্য মিলেছে ৫৩ হাজার ২০৭ জনের। বিআরটিএর প্রতিবেদনে দেশের একটি বিভাগীয় সদর হাসপাতালে ভর্তিকৃত সড়ক দুর্ঘটনায় আহতের সংখ্যাও সারা দেশ থেকে তুলে আনতে পারেনি।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুসরণ করে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেইল সড়ক দুর্ঘটনা কমে এসেছে জানিয়ে বক্তারা বলেন, বিআরটিএ সেকেন্ডারি সোর্স ব্যবহারের কারণে সড়ক দুর্ঘটনার প্রকৃত চিত্র তুলে আনতে পারছে না। ফলে দেশের মানুষের জীবন বাঁচাতে সরকার সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সড়ক নিরাপত্তা জোটের সভাপতি ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ আব্দুল হক, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব রোবায়েত ফৌরদোস, বিশিষ্ট সাংবাদিক হারুন অর রশিদ, সাংবাদিক মনজুরুল আলম পান্না, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি তাওহিদুল হক লিটন।