Search

ডেঙ্গু সচেতনতা বাড়লেও কমছে না আক্রান্তের সংখ্যা, জনমনে ভীতি বাড়ছে

ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় এক লাখ ১২ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে, যার প্রায় ২০ শতাংশই হল ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৫০০ এরও অধিক মারা গেছে। জলবায়ু পরিবর্তন ডেঙ্গুর মতো মশাবাহিত রোগের বিস্তার বাড়িয়ে তুলছে, যা বড়দের পাশাপাশি সরাসরি শিশুদের জীবনেও প্রভাব ফেলছে।


ডেঙ্গু সচেতনতা বাড়লেও কমছে না আক্রান্তের সংখ্যা, জনমনে ভীতি বাড়ছে

সারাদেশে ক্রমাগত বেড়েই চলেছে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা। রোগীর চাপ বেড়েছে হাসপাতালগুলোতে। তবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে আগের চেয়ে সচেতনতাও কিছুটা বেড়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বছরব্যাপী নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। দেয়া হচ্ছে সচেতন করার নানা নির্দেশনা।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করেছেন সংস্থাটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি বলেছেন, সিঙ্গাপুরের মডেল অনুসরণ করে মাঠপর্যায়ে মশার আধার নির্মূলে কাজ করছেন তারা। ৭৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে যেসব ওয়ার্ডে গত এক সপ্তাহে ১০ জনের বেশি ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে, সেই ওয়ার্ডগুলোকে লাল বা বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত করে চিরুনি অভিযান চালানো হচ্ছে। এলাকাবাসী, এলাকার মুরব্বিসহ সবাইকে সম্পৃক্ত করে এই বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে।

আর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বার্তা ছড়িয়ে দিতে শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। এডিসের লার্ভা নির্মূলের পাশাপাশি শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষকে সচেতন করছেন তারা।

এদিকে, ঢাকার মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর চাপ কমছেই না। বৃষ্টি ও গরমের এই সময়ে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে,তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এডিস মশার বিস্তারে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও।সব মিলিয়ে হাসপাতালে গিজ গিজ মানুষের ভিড়। ডেঙ্গু পরীক্ষায় রক্ত সংগ্রহে হাসপাতালের ল্যাবগুলোতে দীর্ঘ লাইন।  প্রতিদিনই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে। মৃতের সংখ্যা ৫৩৭ জনে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে জনসাধারণের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশের সরকারি হাসপাতালে ৭০ শতাংশ রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এসব রোগীর চিকিৎসায় প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আজ রোববার ঢাকার বনানীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসা বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। দুই ধরনের ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। অনেকের প্লাটিলেট ও আইসিইউ প্রয়োজন হয়। অনেকের শুধু ওষুধেই সুস্থ হয়। গড়ে রোগীপ্রতি ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে। সেই হিসাবে চলতি মৌসুমে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ডেঙ্গু চিকিৎসায় ব্যয় করেছে সরকার।

চলতি মৌসুমে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ১৮৪ জন। তাদের মধ্যে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ৩ হাজার ৪১১ জন। আর মারা গেছেন ৫৩৭ জন। এখনো হাসপাতালে ভর্তি ৮২৩৬ জন। নারীরা আক্রান্ত কম হলেও মারা যাচ্ছেন বেশি। পুরুষের প্রায় দ্বিগুণ নারী মারা যায়। তারা চিকিৎসা নিতে বিলম্ব করছেন বলেই তাদের মৃত্যু বেশি হচ্ছে। হয়তো তাদের প্রতি নজর দেওয়া হচ্ছে না। দেশের মোট হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে পুরুষ রোগী ৬৫ শতাংশ। ডেঙ্গুতে মৃত্যু রোগীর ৬৫ শতাংশ নারী আর ৩৫ শতাংশ পুরুষ।#