ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক যেন মৃত্যুর ফাঁদ
ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের বেশ কিছু স্থান দেবে গিয়ে ঢেউয়ের মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কটি যেন মৃত্যুর ফাঁদে পরিণত হয়েছে। যানবাহনের ক্ষতির পাশাপাশি ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। যেন দেখার কেউ নেই। সড়ক বিভাগ বলছে তীব্র তাপদাহের কারণে পিচ গলে যাওয়া এবং সড়কে চলাচল করা গাড়ি ওভার লোডিংয়ের কারণে এমনটি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঝিনাইদহ থেকে কালীগঞ্জ যাওয়ার পথে তেঁতুলতলা বাজার, বিষয়খালী বাজার, সালাভরা, খয়েরতলা বাকুলিয়াসহ যশোর সীমানা পর্যন্ত বেশ কয়েকটি জায়গায় ৮০০-১২০০ মিটার রাস্তা ঢেউয়ের মতো অবস্থায় রয়েছে। এসব রাস্তা পার হতে হয় ঝুঁকি নিয়ে। রাস্তার এমন অবস্থায় চলার পথে বিকল হচ্ছে যানবাহন। গত দুই সপ্তাহ ধরে এই সড়কটি এতটাই বেহাল যে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এই সড়কটি দেখলে বোঝার উপায় নেই এটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় মহাসড়ক। বেঁকে যাওয়া জায়গাগুলো ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মেরামত করা হচ্ছে। সড়কটি এমনভাবে মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করা হলেও বর্ষা মৌসুমে খানাখন্দে পরিণত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সড়কটি এখন পথচারী এবং যানবাহনের জন্য গলার কাঁটা।
জানা যায়, দুই মাস হলো ঝিনাইদহ-যশোর সড়ক উইকেয়ার সেকশন (ফেজ-১) ছয় লেন প্রকল্পের অধীনে সড়কটি হস্তান্তর করা হয়েছে। যার ফলে ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের অধীনে নেই। সড়কের সকল সমস্যা প্রকল্পের মাধ্যমে সমাধান করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৮০০ মিটার রাস্তার সমস্যা চিহ্নিত করে সেগুলো মেরামত করা শুরু করেছে।
বিশয়খালী এলাকার মো. বশির আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সড়কের বেহাল দশা। মাঝে মধ্যেই মোটরসাইকেল, ইজিবিইক দুর্ঘটনার শিকার হয়। কোনো প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন। এখন রাস্তাটি যেভাবে মেরামত করা হচ্ছে, এটা বেশি দিন টেকসই হবে না। রাস্তাটি ভালোভাবে মেরামত করার দাবি জানাই।
সড়কে টেম্পু চালক অশিক কুমার জানান, এই রাস্তায় চলাচল করতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। যাত্রী নিয়ে সব সময় ঝুঁকি নিয়ে পথ চলতে হয়। খুব দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন।
গাড়ি চালক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ১৫-২০ দিন হলো সড়কটি বেশি খারাপ হয়ে গেছে। যাত্রীরা ঠিকমতো গাড়িতে বসতে পারে না। গতকাল তার গাড়ির হাফচেম্বার ভেঙে গাড়ি পড়ে গিয়ে ইঞ্জিন সিস করেছিল। খুবই সমস্যার মধ্যে আছেন।
প্রাইভেট কার চালক মহাসিন জানান, সড়কে যে সমস্যা চোখে দেখেই বোঝা যাচ্ছে এটা নিয়ে বলার কিছুই নেই। সড়কের এই অবস্থার কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তাটি যেভাবে মেরামত করা হচ্ছে এতে করে দুদিন আরও সমস্যা হবে।
ঝিনাইদহ-যশোর সড়ক উইকেয়ার সেকশন (ফেজ-১) ছয় লেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. নিলন আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, তীব্র তাপদাহের কারণে বিটুমিন গেলে গেছে। এর পাশাপাশি সড়কে চলাচলকারী গাড়িগুলো ওভার লোডিংয়ের কারণে সড়কে এমন ঢেউ খেলানো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটি মেরামত করে চলাচলের জন্য উপযোগী করে তোলা হচ্ছে।
তবে ঝিনাইদহ-যশোর সড়ক উইকেয়ার সেকশন (ফেজ-১) ছয় লেন প্রকল্পের অধীনে সড়কটি হস্তান্তর করার কারণে ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের করার কিছু নেই। এখন সড়কের সকল সমস্যা প্রকল্পের মাধ্যমে সমাধান করবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। #