Search

আওয়ামী লীগ গণহত্যাকারী একটি সিন্ডিকেট: জামায়াত আমির

আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল নয়, বরং গণহত্যাকারী একটি সিন্ডিকেট বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের আমির ডা. শফিকুর রহমান।


তিনি বলেন, আগে গণহত্যার বিচার হোক, এরপর ক্ষতিগ্রস্তরাই রায় দেবেন ওনারা (আওয়ামী লীগ) এদেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে কি না

মঙ্গলবার বিকালে বরিশাল নগরের হেমায়েত উদ্দিন কেন্দ্রীয় ইদগাহ ময়দানে জামায়াতে ইসলামী বরিশাল মহানগর ও জেলা শাখার কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর এসব কথা বলেন।

জামায়াত আমির বলেন, মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধসহ সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বাংলাদেশে আমরা যুগ যুগ ধরে বসবাস করছি।আমাদের মাঝে ধর্মীয় ও সামাজিক সম্প্রীতি আছে। কিন্তু একটা গোষ্ঠী বাংলাদেশকে সাড়ে ২৩ বছর শাসন করেছে বিভিন্ন পর্বে। তারা এই বাংলাদেশকে এক থাকতে দেয়নি, জনগণকে টুকরা টুকরা করে বিভক্ত করেছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ, মেজরিটি-মাইনরিটি বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের সন্তানদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে রাস্তায় নেমেছিলাম ফ্যাসিজমকে বিদায় করার জন্য। সাড়ে ১৫ বছর আমরা দফায় দফায় আন্দোলন সংগ্রাম করেছি, ফ্যাসিজম বিদায়ে আমরা হয়তো ভিত রচনা করেছি; কিন্তু রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা বিদায় করতে পারিনি। শেষ আন্দোলনটা রাজনৈতিক ছিল না, ছাত্র-যুবসমাজের একটা অধিকারের আন্দোলন ছিল। তারা কোটা সংস্কারের দাবি করেছিল। আর সরকার তাদের দমন করার জন্য হাতুড়ি বাহিনী পাঠিয়েছে। ওরা আমাদের ছেলেদের পিটিয়েছে, কলিজার টুকরা মেয়েদেরও পিটিয়েছে। এ অবস্থা দেখে একটি ছেলে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিল এবং বলেছিল—বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর। দুনিয়ায় মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য অনেকেই মারা যায়, কিন্তু ডানা মেলে বুকে গুলিকে আলিঙ্গন করেছেন একমাত্র ব্যক্তি আবু সাঈদ। আমরা এ সন্তানের জন্য গর্বিত।

জামায়াত আমির বলেন, এত এত ঘটনা কেন ঘটলো? একটা দল ও একজন ব্যক্তির রাক্ষুসে মানসিকতার কারণে এমনটা হয়েছে। তারা ক্ষমতার রাক্ষস, তারা অর্থের রাক্ষস; তারা দাম্ভিক ছিলেন, বড় অহংকারী ছিলেন; মানুষকে এবং বিভিন্ন দলকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছেন। তারা মানুষ বলে কাউকে সম্মান করেননি। দুনিয়ার পাওনা তারা কিছুটা পেয়েছেন, কিছুটা বাকি আছে। যেহেতু তারা গণহত্যাকারী ব্যক্তি ও দল, সেই কারণে আমরা চাই গণহত্যাকারী ব্যক্তি ও দলের প্রত্যেকের ন্যায় বিচার হোক।

গণহত্যার অভিযোগ মাথায় নিয়ে পালানো আসামিদের উদ্দেশে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিদেশে যারা আছেন তাদের বলছি- সত্যি যদি দেশটাকে ভালোবাসেন তাহলে চলে আসেন। কী হয়েছে, অসুবিধা নেই। আপনাদের আমলে আমরা দফায় দফায় জেলে গিয়েছি, আমাদের কেমন রেখেছিলেন; এখন এলে আপনারা না হয় সেটি দেখার সুযোগ পাবেন। আপনারা মিথ্যা মামলায় সাজানো সাক্ষী দিয়ে পাতানো আদালত দিয়ে আমাদের নেতাদের ফাঁসি দিয়েছেন, খুন করেছেন। কিন্তু আপনারা তো প্রকাশ্য দিবালোকের খুনি, বিশ্ববাসীর সামনে খুন করেছেন। তখন কোথায় ছিল আপনাদের মানবিক সত্তাটুকু, কীভাবে পারলেন গণহত্যা চালাতে। ইন্টারনেট বন্ধ করে লাশগুলো গুম করতে কীভাবে পারলেন। আজও অনেকে স্বজনের লাশ পাননি বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন।